Tuesday, June 26, 2012

Short Story of Arpita Dutta : Jibaner Mukhomukhi

জীবনের মুখোমুখি
অর্পিতা দত্ত
    এবারে পর্দার রঙ গোলাপী বদলে নীল হল এবং আমার নতুন বন্ধুটির নাম টুটু৷ এই তিন দিন হল টুটুরা এখানে এসেছে৷ওর আগে বিল্লু এবং বিল্লুর আগে আমার বন্ধু ছিল তুন৷ কি অদ্ভুত সব নাম তাই না? অবশ্য এসব ওদের ডাক নাম, এছাড়া একটা করে ভালো নামও আছে৷ এখনকার দিনের নাকি এটাই চল৷ আমাদের সময়তো একটা নাম দিয়ে ঘরে ও বাইরে চলে যেত৷ আর নামগুলো হতো যুক্তাক্ষর সহ চার-পাঁচ অক্ষর-ওলা, যেমন- সমরেন্দ্রনাথ, লক্ষীকান্ত, ধরনীকান্ত, সজনীকান্ত ইত্যাদি ইত্যাদি৷ যেমন আমার নামটাই ধরুন না কেন অবনী শংকর ব্যানার্জী; অবশ্য এখন সবাই অবনীবাবু /ব্যানার্জীবাবু বলেই ডাকে৷

    তিন বছর থেকে ছোট্টো তুনকে নিয়ে রথিন আর সোমা এসেছিল এবাড়িতে৷ তারপর থেকে ও আমাদের দিদুন-দাদন বলতে পাগল৷ ওর সঙ্গে খেলা, ওকে স্কুলে দিয়ে আসা, নিয়ে আসা সবই এই দাদানের দায়িত্ব৷ আমিও তখন সদ্য অবসরপ্রাপ্ত, তুনকে নিয়ে আমাদেরও সময় কাটতে লাগল৷ কিন্তু সময়তো কারো জন্য থেমে থাকে না৷তুনের বাবার বদলির চাকরি, তাই ওরা সপরিবারে মালদা চলে গেল৷ যাবার সময় তুনের জলে ভরা চোখ আমার আজও মনে পড়ে৷

    তুনরা চলে যাবার পর কিভাবে যে আমাদের দিন কেটেছিল সে শুধুমাত্র আমি ও আমার গিন্নি ছাড়া আর কেউ জানেনা৷তারপরই ঠিক করে ফেললাম যদি বাড়ি ভাড়া দিতে হয় তবে এমন কোন পরিবারের কাছে যেখানে আমার ছোট্ট বন্ধু আছে৷

    এরপর এল বিল্লু ৷ প্রায় সাঢ়ে তিন বছ বিল্লুরা আমাদের বাড়িতে ছিল৷ ওর বাবার বদলি হয়ে যাওয়ার জন্য ওদের শিলিগুড়ি চলে যেতে হয়েছে৷ যখন বিল্লু আমাদের বাড়িতে এসেছিলো তখন ও ক্লাস ওয়ানে পড়ে৷ দেখতে দেখতে তিন বছর কেটে গেল৷

    গল্প প্রসঙ্গে আমাকে নিঃসন্তান মনে হলেও বাস্তবে আমার এক পুত্র, পুত্রবধু, নাতী ও নাতনী বর্তমান৷সায়ন যেবার মেডিকেলে চান্স পেল তখন বাড়িসুদ্ধ লোকের কি আনন্দ৷ ভেবেছিলাম ও ডাক্তার হয়ে ফিরে এলে একটি দাতব্য চিকিত্সালয় খুলে দেব৷ যেখানে বিনা খরচায় গ্রামের রোগীদের চিকিত্সা হবে৷ কিন্তু তা আর হলো কোথায়৷ স্বপ্নের জগv আর বাস্তব জগv-এর বিশাল ব্যবধান তা ছেলে বুঝিয়ে দিল৷ সায়ন পাশ করে ওখানকারই এক সরকারী হাসপাতালে চাকুরী ও প্রাকটিস শুরু করে দিল এবং ওখানেই থাকার সিদ্ধান্ত নিল৷ প্রথম প্রথম ছুটি-ছাটায় বাড়ি আসলেও পরে তা কমে গেল৷ ওর মার কথামত দেখে শুনে এখানকারই মেয়ে কনিকার সাথে ওর বিয়ে দিলাম৷ ভেবেছিলাম ছেলে আমার বাপের বাড়ির টানে যদি আসে! কিন্তু এই চেষ্টাও বিফল৷ সুতরাং আমরা এখআনে দুই বুড়ো-বুড়ি থেকে গেলাম৷


    আমার ধারনা ছিল যাদের ঘরে শুধুমাত্র কন্যা-সন্তান থাকে তারাই কেবল শেষ বয়সে মেয়ে বিয়ে দিয়ে বুড়ো-বুড়ি একে অপরের সঙ্গী হয়৷ কিন্তু এখন সেই ধারণা পুরোপুরি ভুল৷ সকলে বলে থাকে আজকের দিনে ছেলে-মেয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই, সবাই সমান৷ এই সত্যের যথাযথ প্রমান পেয়েছি আমি ও আমার গিন্নি৷ আমার যদি এখন ছেলে না থেকে একটা মেয়ে থাকত, সেওতো আমাদের ছেড়ে তার নিজের ঘরকন্না নিয়ে ব্যস্ত থাকতো!----- তাই বলে মনে করবেন না সায়নের প্রতি আমার কোন অভিমান আছে৷ ওতো ওর নিজের কর্তব্য পালন করছে৷


    প্রত্যেক মানুষের মতো আমারও স্বপ্ন ছিল শেষ বয়সে স্ত্রী, ছেলে, ছেলেবউ, নাতী-নাতনী নিয়ে ভরা সুখী জীবন৷কিন্তু ওই বললাম স্বপ্নের জগv আর বাস্তব জগv-এর ব্যবধান৷ ইচ্ছে থাকলে ও উপায় নেই৷ যারা এখন মধ্য গগনে তারা এখন ভাবতে পারেন বুড়োটা একা থেকে থেকে হতাশায় ভুগছে৷ কিন্তু তা নয়, আমিতো আমার ছোট্টো বন্ধুদের নিয়ে ভালোই আছি৷শুধু মাঝে মাঝে বুবাই আর তিতলির জন্য বড় খারাপ লাগে; তাছাড়া ছোটো থেকে ঠাম্মি-দাদুর আদর কতটুকুই-বা পেয়েছে ওরা৷ 


##################

Friday, June 22, 2012

Andha Goli by Biplab Kumar Maity

অন্ধগলি
বিপ্লব কুমার মাইতি
অন্তসার শূন্য যুবকের ক্রন্দন রোল-
      আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হয় নারিকে চাহীয়া
চাতকের বারি সুধা পান করেনি যে -
     হৃদয়ে রয়েছে শুধু নারীর উত্তরের প্রতীক্ষা৷
দুর্নিবার উচ্চাকাঙ্খা আর প্রেম বোধ -
     দুই জোড়া তরী ভাসিয়ে দেয় সাগর পানে
মধ্যগগনে তখন শুধুই রবির বিলাপ
     রবি যতই হোক তেজদ্বীপ্ত
প্রেম কাতর প্রমিক মন; যে
    যাবেনা তারে বাঁধা তুচ্ছ ইন্দ্রজালে৷
অর্থ লিপ্সায় স্নাত নারী; দেয় হাতছানি - 
    ভালো বেশে আসে নারী, দুলনায় সে পটু,
প্রেমিক হৃদয় তখন রক্তাক্ত মরুভূমি - 
    বাস্তব শক্তিটুকু পেয়েছে তার লোপ৷
কোন এক মৌসিন রামের প্রত্যাশায় -
    দেশ, কাল, জাতি, ধর্ম দেয় সে জলাঞ্জলি -
জন্মদায়ীনী হয় সেদিন পরিত্যক্তা৷

     ফিরে আসে পুরুষ সেই পুরানো মাতৃকোলে,
        প্রেম যেদিন যায় চলে পিঞ্জর হতে -
     ফেলে আসা দুঃখে পায় অনেক আত্ম চেতনা -
       হারিয়ে যাওয়া মুহুর্ত চায় শুধু ক্ষমা প্রার্থনা৷৷



Sunday, June 10, 2012

Utpal Aguan er Kobita (Poem) : Jal Jamechhe Kalo Matite

      জল জমেছে কালো মাটিতে
        উত্পল আগুয়ান


নির্নিমেশ হীন আলো জীবন!
পুঙ্খ-অনুপুঙ্খে জড়িয়ে ফেলেছি তোমাকে৷
জল, মাটী, বাতাস, সবই আছে-
হয়ত একটু অন্যরকম৷
     এখানে মাটির রং কালো হয়েছে 
             দীর্ঘ রোদ্দুরে-
     কালো মাটিতে জল জমেছে
     যন্ত্রনার ফোঁটা ফোঁটা ঘামে,
পেঁজা তুলোর মতো মেঘ জমতে জমতে
কৃষ্ণবর্ন আকাশ হয়েছে ভরদুপুরে৷
     বন্ধু অন্তহীন জড়িয়ে ফেলেছি,
     নির্নিমেশ অন্ধকারের সাথে!
এখানে জল মাটী বাতাস সবই পাবে 
     তবে একটু অন্যরকমে৷
     জানিনা দুরত্ব বাড়বে কিনা-
          জীবনের শেষ বোঝাবুঝিতে৷৷



Char Adhyay by Subrata Bandyopadhyay

Char Adhyay by Subrata Bandyopadhyay
      চার অধ্যায়
   সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়


              (১)
তুমি যা চাও সব পাবে,
তলার ও কুড়োবে গাছের ও খাবে!
- এসো সেই মন্ত্রে দিই দিক্ষা-
দিনকে রাত করো, রাতকে দিন - এর নাম শিক্ষা!


              (২)
আমি ধর্মেও আছি, জিরাফেও আছি
মোমবাতি হাতে, নামাজেও আছি,
ভাতাতেও আছি, হাতাতেও আছি - 
ধংসেতে আছি, মিথ্যাতে আছি,
তাই তুমি আর আমি এত কাছাকাছি .....!


              (৩)
চাকরি দেবে দৌড়াবো -
দহন রোদে দৌড়াবো ...!
কলজে হাতে দৌড়াবো ...
একবারই তো দৌড়াবো ....!
   ...   ...   ...   ...
বন্ধনহীন আজ আমি, হাওয়ায় শুধু দৌড়াবো ...
অকুতোভয় মৃত্যুঞ্জয়, শুধুই আমি দৌড়াবো ...!
দহন রোদে মৃত্যু হলো, তবুও আমি দৌড়াবো ...
               ... অনন্তকাল দৌড়াবো ...
            
               (৪)
চাকরির প্রস্তাব দিল সরকার!
চাকরিটা বোনের বড় দরকার!
চাকরিটা নেবেকি আমার বোন
নিয়ে নে বোন, এরই নাম জীবন!
                                _______
                                _______   






Friday, June 8, 2012

Ek Pashla Bristi | Poem of Aishyarya Bhattacharya (Chatterjee)

Ek Pashla Bristi 

Aishyarya Bhattacharya (Chatterjee) er kobita 
এক পশলা বৃষ্টি
ঐশ্বর্য ভট্টাচার্য (চ্যাটার্জী)
কতদিন ....
কতদিন পর -
এক পশলা বৃষ্টির আশ্লেষে,
আষ্টে - পৃষ্টে লেপ্টে হেঁটে ফেরা৷
বহুদিনের হারিয়ে কথা,
অসমাপ্ত কবিতার ছেঁড়া-পাতা
আর, ধূলোয় চাপা ভালোলাগার ফসিল,
আজকে যেন ছেঁড়া - মেঘের মতন -
আবছা - অস্পষ্ট জল ছবি হয়ে ঝরে৷
অস্বচ্ছ তবু জানি, অস্ফূট নয়৷
হঠাৎ আঘাতে হারিয়ে যাওয়া স্মৃতির মতন -
সে - ও আজ ঈঙ্গিত খুঁজে ফেরে৷
ভালোলাগা ভালোবাসার যোগসূত্রহীন,
কাঠফাটা জীবনের জঠর থেকে -
সে যেন,
   সঞ্জীবনের গ্রন্থী হাতড়ে মরে৷
এই বৃষ্টি তাই আমাকে পরিপূর্ণ শান্তি এনে দেয়না,
দেয় এক অসমাপ্ত ভালোবাসার হাতছানি,
অতীতের তীর থেকে ভেসে আসা সপ্নের মত -
কোনো প্রেমের কবিতার অপূরণতার গ্লানি৷ 
খাপছাড়া অবিন্যস্ত কিছু,
   নিছক আত্মস্থঃ কামনা - বাসনা৷
Typing incomplete , soon it will be completed.....